2.5.8 ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের সুবিধা (Advantages of Cloud Computing)

ক্লাউড কম্পিউটিং সার্ভিস দাতা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকে। এ সব সার্ভিস মডেলকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।

অবকাঠামোগত সেবা (IaaS): Infrastructure as a Service): এই মডেলে অবকাঠামো ভাড়া দেওয়া হয়। অ্যামাজন-এর ইলাস্টিক কম্পিউটিং ক্লাউড (EC2) এরকম একটি মডেল। EC2 এর প্রতিটি সার্ভারে 1 থেকে 4 টি ভার্চুয়াল মেশিনে চলে, ক্রেতারা এগুলোই ভাড়া নিয়ে থাকেন। ব্যবহারকারীরা ভার্চুয়াল মেশিনে নিজেদের ইচ্ছে মতো অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করে নিজের নিয়ন্ত্রণে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার চালাতে পারেন।

প্ল্যাটফর্ম ভিত্তিক সেবা (PaaS: Platform as a Service): এই মডেলে ভার্চুয়াল মেশিন ভাড়া না দিয়ে ভাড়া দেওয়া হয় কম্পিউটিং প্ল্যাটফর্ম, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত অপারেটিং সিস্টেম, প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ এক্সিকিউশন পরিবেশ, ডাটাবেজ এবং ওয়েব সার্ভার ইত্যাদি। এই প্ল্যাটফর্মে ব্যবহারকারী স্বল্প ব্যয়ে তার অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার উন্নয়ন করতে পারেন। Microsoft এর Azure এবং Google এর App Engine এই মডেলের উদাহরণ।

সফটওয়্যার ভিত্তিক সেবা (SaaS: Software as a Service) এই মডেলে ব্যবহারকারীরা সার্ভিস দাতা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা সফটওয়্যার ও ডাটাবেজে অ্যাকসেস এবং ব্যবহারে সুযোগ পায়। এর ফলে ব্যবহারকারীকে সিপিইউ বা স্টোরেজের অবস্থান, কনফিগারেশন ইত্যাদি জানা বা রক্ষণাবেক্ষণ করার প্রয়োজন হয় না।

এছাড়াও ক্লাউড সার্ভিসের ব্যবহারকারীরা নিচের সুবিধাগুলো ভোগ করে থাকে:যত চাহিদা তত সার্ভিস (Resource Flexibility/Scalability): ছোট কিংবা বড় যে কোনো ক্রেতার সব রকম চাহিদা মেটানো হবে, ক্রেতা যত চাইবে সার্ভিস দাতা তত পরিমাণে সার্ভিস দিতে পারবে। ক্রেতা তার ইচ্ছে অনুযায়ী চাহিদা বাড়াতে বা কমাতে পারবে।

যখন চাহিদা তখন সার্ভিস (On Demand): ক্রেতা যখনই চাইবে সার্ভিস দাতা তখনই সার্ভিস দিতে পারবে। ক্রেতা যে সময় ইচ্ছে সার্ভিস চাইতে পারবে এবং সে সময়ই সার্ভিস দাতা তার চাহিদা পূরণ করবে।

যখন ব্যবহার তখন মূল্য শোধ (Pay as you go): ক্রেতাকে আগে থেকেই কোনো সার্ভিস রিজার্ভ করতে হবে না। ক্রেতা যতটুকু ব্যবহার করবে, শুধু ততটুকুর জন্যই মূল্য পরিশোধ করবে।

উদ্যোক্তাদের সুযোগ (Opportunity for Entrepreneurs): সার্বক্ষণিক ব্যবহারযোগ্য ক্লাউড সার্ভিস ছোট ও প্রাথমিক উদ্যোক্তাদের জন্য সহজেই ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গা থেকে ডেটা আপলোড ও ডাউনলোড করা যায়। নিজস্ব হার্ডওয়্যার খুব বেশি প্রয়োজন হয় না। শুধু তাই নয়, স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার আপডেট হয় বলে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, লাইসেন্স ফি ইত্যাদির জন্য বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় না। পরিচালনা ব্যয় কম এবং স্বল্প সংখ্যক ও প্রশিক্ষণবিহীন জনবল দিয়েও অনেক কাজ করা যায়।

ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে পৃথিবীর প্রযুক্তির জগতে একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে সত্যি কিন্তু একই সাথে এটি তথ্যের জগতে বিশাল নিরাপত্তার ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। এই সার্ভিসে আপলোড করা তথ্য কোথায় সংরক্ষিত এবং প্রক্রিয়াকরণ হয়, তা ব্যবহারকারী জানতে পারে না। সেই তথ্য বা ডেটার উপর এবং প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যারের উপর ব্যবহারকারীর একক নিয়ন্ত্রণ থাকে না। বলা বাহুল্য তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা কম।